তালাশ এক্সক্লুসিভঃ
বরগুনায় মাদ্রাসার এক শিক্ষক মাসের পর মাস কর্মস্থলে অনুপস্থিত। একটি চক্রের সহযোগিতায় তিনি হাজিরা খাতায় উপস্থিত দেখিয়ে বেতন তুলে নিয়েছেন। কর্মস্থলে অনুপস্থিত শিক্ষক হচ্ছেন বরগুনা সদর উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের নেছারাবাদ ফজলুল হক দাখিল মাদ্রাসার গনিত বিভাগের শিক্ষক আহামেদুল্লাহ। তিনি ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। জানা গেছে,নেছারাবাদ ফজলুল হক দাখিল মাদ্রাসায় গনিত শিক্ষক হিসেবে আহামেদুল্লাহ নাম থাকলেও তিনি কোন ক্লাস নেননি। গত বছরের নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত মাদ্রাসায় উপস্থিত ছিলেন। এরপর থেকে ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। সরেজমিন মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা যায়, মাদ্রাসায় অন্যান্য শিক্ষকরা উপস্থিত থাকলেও শিক্ষক আহাম্মেদুল্লাহ উপস্থিত নেই। আর শিক্ষকদের হাজিরা খাতায় আহাম্মেদুল্লাহ স্বাক্ষর রয়েছে। এ ছাড়া ২০১৫,২০১৬ ও ২০১৭ সালের হাজিরা খাতায় তাঁর উপস্থিতির স্বাক্ষর রয়েছে। শিক্ষকদের নামে মাদ্রাসা থেকে প্রতিমাসে বেতন শীট ব্যাংকে পাঠালে সেখানেও ওই শিক্ষকের নামে বেতন হচ্ছে।
ওই মাদ্রাসার একাধিক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,শিক্ষক আহামেদুল্লাহ কোন সময় মাদ্রাসায় আসেন না। তাঁর দুলাভাই মাদ্রাসার সুপার ও বাবা শিক্ষক ক্বারী মোহাম্মদ আবু সাঈদ দুজনে মিলে তাঁর (শিক্ষক আহামেদুল্লাহ) নামে প্রতি মাসে বেতন তুলে নিয়ে যান। ওই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও শিক্ষক তাঁর (শিক্ষক আহামেদুল্লাহ) বাবা ক্বারী মোহাম্মদ আবু সাঈদ বলেন,আহাম্মেদুল্লাহ একটি কাজের জন্য ঢাকায় গিয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে চলে আসবে। কিভাবে হাজিরা খাতায় তাঁর স্বাক্ষর এলো এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন আপনার সাথে পরে দেখা করে কথা বলব। মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত নবম শ্রেনীর ছাত্র মেহেদী হাসান বলেন, আমাদের মাদ্রাসার অংক ক্লাস অন্য স্যারে নেয়। আহামেদুল্লাহ স্যার নামের কোন শিক্ষককে আমরা চিনিনা। তিনি আমাদের কোনদিন অংক ক্লাস নেননি। অষ্টম শ্রেনী ছাত্র রাকিব হোসেন বলেন, সপ্তম শ্রেনীতে পড়ার সময় একবার আহামেদুল্লাহ স্যার অংক ক্লাস নিয়েছে। তারপর থেকে আর কোন ক্লাস নেননি।
মাদ্রাসার সুপার একেএম ইসহাক বলেন, মাদ্রাসার গনিত শিক্ষক আহামেদুল্লাহ ঢাকায় থাকেন। শিক্ষক হাজিরা খাতায় তাঁর স্বাক্ষর কিভাবে এলো এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, তাঁর বাবা মাদ্রাসার শিক্ষক ক্বারী মোহাম্মদ আবু সাঈদ হাজিরা খাতায় আহামেদুল্লাহ’র স্বাক্ষর দেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জামাল উদ্দীন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে তদন্ত করে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, মাদ্রাসার সুপার কিভাবে শিক্ষকের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরের ব্যবস্থা করলেন তার বেতন বন্ধ করে দেওয়া হবে। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা প্রান কুমার দে বলেন,আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply